বিশ্বের বৃহত্তম বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাদেশের স্থান পঞ্চম। বাস্তুচ্যুত মানুষের কারণে ঢাকার পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে, সেবার মান কমছে এবং নগর অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গতকাল বুধবার আর আই খান মিলনায়তনে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নগর সমস্যা ও বাস্তুচ্যুত মানুষের নগরে অভিগমন ও অভিযোজন : ঢাকা মহানগরের উপর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ’ শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের নজরুল ইসলাম আরবান স্টুডিও এবং বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনার আয়োজন করে।
গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়- নদী ভাঙন, বন্যা, সাইক্লোন, জলাবদ্ধতা ও খরার কারণে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকা মহানগরের ২০ শতাংশ এলাকা জলবায়ু বিপদাপন্ন। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ঢাকার জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী। ঢাকামুখী অভিবাসনের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন, গ্রামে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বার্থে ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ ও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপক কান্তি পাল। গবেষণার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম নাজেম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন।
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকি বেশি। গবেষণার মাধ্যমে সম্ভাব্য ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করতে হবে এবং সমাধানের উপায় বের করতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশ বিষয়ক সার্বিক গবেষণা গতিশীল করতে শিগগিরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ্রিন হাউজ’ নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান।